ছবি : ইন্টারনেট |
দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে এক বৈঠকে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা একত্রিত হন। ৪ ডিসেম্বর, বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠক থেকে প্রতিবেশী ভারত কর্তৃক বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা ভারতের অপপ্রচারকে মোকাবিলা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করেছেন। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, বৈঠকে উপস্থিত নেতারা প্রবাসী, বন্ধুসুলভ দেশ ও বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন এবং বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিভিন্ন চুক্তি প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন।
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ক্ষতিকর দিকগুলো যেমন রামপাল প্রকল্পের মতো চুক্তি বাতিল করার এবং বাংলাদেশের প্রতি ভারতের অর্থনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যের নিন্দা জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ভারতকে বাংলাদেশের প্রতি মর্যাদাশীল এবং প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর ক্ষেত্রে দেশের সকল সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। সবাই একমত হয়েছে যে, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে বাংলাদেশের ঐক্য অটুট রাখা হবে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো অপপ্রচার বা উসকানির মুখে দুর্বল হয়ে যাব না। আমাদের ঐক্য শক্তিশালী থাকবে এবং আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেব।’’
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, বৈঠকে একটি প্রস্তাব এসেছে— দেশের সকল রাজনৈতিক দল এবং জনগণ মিলে ভারতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সমাবেশ এবং রাজনৈতিক কাউন্সিলের আয়োজন করতে পারে। এটি একটি ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ হতে পারে যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।
বৈঠকে বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), গণসংহতি আন্দোলন, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দলের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন দিক নির্দেশনার সূচনা করেছে, যেখানে দেশ, সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন