ছবি: ইন্টারনেট |
শীতকাল আসলেই যে সকল খাবার আমাদের প্রিয় হয়ে ওঠে, তার মধ্যে খেজুরের গুড় অন্যতম। শীতে পিঠা, পায়েস কিংবা মিষ্টি খাবারের মজা খাঁটি গুড়ের সাথেই পূর্ণ পায়। কিন্তু, বাজারে শত ভেজালের ভিড়ে খাঁটি গুড় চেনা হয়ে ওঠে বেশ কষ্টসাধ্য। তবে কিছু সহজ উপায়ে আপনি খাঁটি গুড় চিনে নিতে পারবেন। উপভোগ করতে পারবেন আসল গুড়ের স্বাদ।
প্রথমত, গুড় কেনার সময় গুড়ের একপাশ একটু ভেঙে চেখে দেখুন। যদি গুড়টি নোনতা স্বাদের হয়, তবে ধরে নিন যে এতে ভেজাল রয়েছে। এছাড়াও, গুড়ের ধরণ পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। পরীক্ষা করতে দুই আঙুল দিয়ে চাপ দিন। যদি এটি নরম হয় বা সহজেই ভেঙ্গে যায়, তাহলে এই গুড়টি ভালো মানের গুড় বা খাঁটি গুড় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু গুড় যদি শক্ত হয়, তবে সেই গুড় কিনতে না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে, কারণ শক্ত গুড় সাধারণত ভেজাল হয়ে থাকে।
খাঁটি গুড় চেনার ক্ষেত্রে গুড়ের রঙও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। খাঁটি গুড় সাধারণত কালো বাদামি রঙের হয়ে থাকে। কিন্তু, গুড়ের রঙ যদি হলদেটে বা অতিরিক্ত উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয়, তাহলে বুঝেনিতে হবে সেই গুড়ে রাসায়নিক মেশানো হয়েছে। কৃত্রিম চিনি মেশানো গুড় সাধারণত চকচকে রঙ্গের হয়ে থাকে। তাই চকচকে রঙ্গের গুড় কেনা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
খেজুরের গুড়ের মাঝে শুধুমাত্র মিষ্টি স্বাদই নয়, এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যগুণও। এটি সাদা চিনির তুলনায় অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। গুড়ে থাকা ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম জাতীয় খনিজ উপাদান শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
গুড়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা:
হজম শক্তি বৃদ্ধি: চায়ে চিনির পরিবর্তে গুড় মিশিয়ে খেলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, যা সারাদিনের জন্য উপকারী।
রক্তাল্পতা সমস্যা সমাধান: রক্তাল্পতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তির জন্য গুড় খুবই উপকারী, কারণ এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং রক্তস্বল্পতা দূর করে।
কোল্ড অ্যালার্জি থেকে রক্ষা: শীতে সর্দি-কাশি এবং অ্যালার্জির মত ভোগান্তি থেকে দূরে রাখতেও গুড় বেশ কার্যকর।
ওজন কমাতে সাহায্য: এটি ওজন কমানোর সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: খাঁটি গুড় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ত্বককে সতেজ রাখে: গুড়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে।
তবে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুড় ক্ষতিকারক হতে পারে। তাদের জন্য সুগার-ফ্রি ক্যাপসুল বা স্টেভিয়া ব্যবহার করাই উত্তম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন