ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আরমানের চিকিৎসা বন্ধ টাকার অভাবে

ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আরমানের চিকিৎসা বন্ধ টাকার অভাবে
ছবি: ইন্টারনেট



নোয়াখালীর এওজবালিয়া ইউনিয়নের নন্দনপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরমান হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারের পোষা দুধের গরু বিক্রি করতে হয়েছে। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। বিপাকে পড়েছে তার পরিবার। 


আরমান নোয়াখালী সদর উপজেলার শান্তসীতা গ্রামের আক্কেল আলী মাঝি বাড়ির মো. আনাল হকের ছেলে। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ আরমান গত ১ আগস্ট মা-বাবাকে না জানিয়ে ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। রাজধানীর বংশাল থানার সামনে ৫ আগস্ট বিকেলে পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। এরপর সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। 


হাসপাতালে শরীর থেকে দুটি গুলি বের করা হলেও মাথায় থাকা আরেকটি গুলি এখনো বের করা হয়নি। কিছুদিন পর আবার মাথায় তীব্র ব্যথা শুরু হলে তাকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। কিন্তু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় চিকিৎসা স্থগিত রয়েছে। 


আরমান বলেন, “আমার শরীরে তিনটি গুলি লাগে—দুটি বুকে আর একটি মাথায়। বুকের জায়গায় ব্যথা নেই, কিন্তু মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হয়। পরীক্ষার খাতায় ঠিকমতো লিখতে পারি না, মাথায় ব্যথা শুরু হয়। কাজ করতে গেলে মাথা টনটন করে।” 


মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, “আরমান ও তার বোন আমাদের মাদরাসায় পড়ে। কয়েক দিন ক্লাসে না আসায় আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গরু বিক্রির টাকা দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। পরিবারের পক্ষে আর চিকিৎসা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সহযোগিতার হাত বাড়ালে তার চিকিৎসা সম্পন্ন হতে পারে।” 


আরমানের বাবা আনাল হক জানান, “ছেলের চিকিৎসার জন্য ঘরের দুধের গরু ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ঋণে জর্জরিত। চিকিৎসা না হওয়ায় আরমান রাতে ঘুমাতে পারে না, কাত হয়ে ছটফট করে। পরিবারের পক্ষে আর কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।” 


নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হাসিব আহমেদ বলেন, “আরমান সাহসী ছেলে। তার চিকিৎসার জন্য গরু বিক্রি করতে হয়েছে, এটি মর্মান্তিক। আমরা তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করব।” 


নোয়াখালী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আখিনূর জাহান নীলা বলেন, “বিষয়টি জানতাম না। এখনো তাকে সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন