পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষে যে দশ দেশ, বাংলাদেশের অবস্থান কতো জানেন?

পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষে যে দশ দেশ, বাংলাদেশের অবস্থান কতো জানেন?


পেঁয়াজ রান্নার করার জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান, যা সারা বিশ্বেই ব্যাপকভাবে রান্নার কাজে ব্যবহার হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পেঁয়াজ উৎপাদন করে বৈচিত্র এই পণ্যটির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিচে সেই  দেশগুলোর তালিকা বর্ণনা করা হলো: 


১. ভারত: শীর্ষে অবস্থান 


পেঁয়াজ উৎপাদনের শীর্ষ দেশ হলো ভারত। বছরে প্রায় ২ কোটি ৬৭ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে দেশটি। মহারাষ্ট্র রাজ্যে পেঁয়াজের সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। ২০২৩ সালে ভারত প্রায় ২৫ লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে। সারা বছর ধরে পেঁয়াজ উৎপাদন অব্যাহত থাকে ভারতে। 


২. চীন: দ্বিতীয় অবস্থান 


পেঁয়াজ উৎপাদনে চীন ভারতের ঠিক পরের  অবস্থান রয়েছে। বছরে ২ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে এই দেশটি। শুধুমাত্র পেঁয়াজ চাষের জন্য চীনে ৯২ লাখ একর জমি বরাদ্দ রয়েছে। চাষিদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতির কারণে চীনে পেঁয়াজ উৎপাদন ক্রমেই বৃদ্ধি হচ্ছে। 


৩. যুক্তরাষ্ট্র: তৃতীয় অবস্থানে 


যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছরে ৩৮(আটত্রিশ) লাখ ২১(একুশ) হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকে। দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয়। উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ রপ্তানি করা হয় মেক্সিকো ও কানাডায়। 


৪. মিসর: নীল ডেল্টার উর্বর ভূমিতে পেয়াজ চাষ 


মিসর বছরে ৩১ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে। নীল নদীর ডেল্টার উর্বর মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য আদর্শ। লাল পেঁয়াজ মিসরে বেশি চাষ হয়। 


৫. তুরস্ক: স্বাদে ভরপুর সিভরি পেঁয়াজ 


তুরস্ক বছরে ২২ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে। সিভরি পেঁয়াজ তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 


পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষে যে দশ দেশ, বাংলাদেশের অবস্থান কতো জানেন?



৬. পাকিস্তান: লাল পেঁয়াজের চাষ 


পাকিস্তানে বছরে ২১ লাখ ২২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। লাল পেঁয়াজই দেশটিতে প্রধানত চাষ করা হয়। 


৭. বাংলাদেশ: বিশ্বে সপ্তম 


পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বছরে প্রায় ১৯ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে পেঁয়াজ চাষ হলেও উত্তরবঙ্গের মাটি চাষের জন্য বেশি উপযোগী। 


৮. সুদান: পেঁয়াজে আচার তৈরির খ্যাতি রয়েছে


সুদানে বছরে ১৯ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। সুদানের মানুষ পেঁয়াজ দিয়ে আচার, শুকনো পেঁয়াজ ও তাজা পেঁয়াজ খেতে অভ্যস্ত। 


৯. ইন্দোনেশিয়া: পেঁয়াজ ওষুধেও ব্যবহার হয়ে থাকে 


ইন্দোনেশিয়ায় বছরে ১৮ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। খাবার ছাড়াও ওষুধের স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। 


১০. রাশিয়া: ইউরোপের শীর্ষ উৎপাদক 


রাশিয়া বছরে ১৭ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করে। দেশটির উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে পেঁয়াজ উৎপাদনে রাশিয়া উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। 


পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশের করণীয় কী?


বাংলাদেশের কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদনে ধারাবাহিকভাবে ভালো সাফল্য দেখাচ্ছেন। তবে দেশের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় পেঁয়াজ আমদানির ওপর কিছুটা নির্ভরশীল থাকতে হয় বাংলাদেশকে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করলে বাংলাদেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে আরও সাফল্য অর্জন করতে পারে। 


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন