তিব্বতের হিমালয় পাদদেশে মঙ্গলবার সকালে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এই কম্পন স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে আঘাত হানে। ভূমিকম্পের আঘাতের তীব্রতায় বহু ভবন ধসে পড়ে, রাস্তা-ঘাটে ধ্বংসস্তূপ পরিণত হয়েছে।
চীনের ভূমিকম্প ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ডিংরি কাউন্টিে এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়ায় এর অভিঘাত ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। ফলে ডিংরি ও আশপাশের এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এখনো ধসে পড়া ধ্বংসস্তূপে অনেকে আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পে বহু মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা বলছে, আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটকে পড়া মানুষদের বের করে আনতে দিন-রাত কাজ করছেন বলেও জানান স্থানীয়রা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অস্থায়ীভাবে চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
ভয়াভহ এই ভূমিকম্পে তিব্বতের পাশাপাশি ভারতের উত্তরাঞ্চল, নেপাল এবং ভুটানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। যদিও এই দেশগুলোতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সেসব এলাকার স্থানীয় মানুষজনকে আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, চীনা সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, এলাকাগুলোতে ত্রিশটিরও বেশি ভবন ধসে পড়েছে এবং অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ভয়াভহ ভূমিকম্পের পর থেকে বেশ কয়েকটি আফটারশক হয়েছে সেসব এলাকায়। এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আফটারশকটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪। ভূমিকেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় আরও আফটারশক হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা
তিব্বতের এই ভূমিকম্প শুধু স্থানীয় এলাকায় নয়, পুরো অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এক করুণ চিত্র তুলে ধরেছে। আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করছে। তবে এ ঘটনা আমাদের প্রকৃতির প্রতি আরও দায়িত্বশীল হওয়ার বার্তা দেয়।
এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে এবং পুনর্বাসনের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন