গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল আবারও সর্বশক্তি দিয়ে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এক ভিডিও বার্তায় তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, "এ তো কেবল শুরু," যা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইসরায়েল আগামীতেও এই হামলা অব্যাহত রাখবে।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, তাদের হামলা হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা ও লক্ষ্যবস্তুকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়েছে। তবে, হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব হামলায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছে।
এই হামলাকে যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল, এই হামলার মাধ্যমে সেটি কার্যত ভেঙে পড়েছে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল এখনও গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির জন্য হামাসের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, তিনি অভিযোগ করেন, হামাস বারবার আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মতপার্থক্য চলছে। গত মার্চ মাসের শুরুর দিকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হয়, যেখানে ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় সম্পন্ন হয়েছিল। তবে, দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা আর শুরু হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপটি আরও দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিল, যাতে জিম্মিদের মুক্তি সহজ হয়। কিন্তু এতে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা বিলম্বিত হতো, যেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হামাস এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে গাজার পরিস্থিতি চরম উত্তেজনাপূর্ণ, এবং নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে এবং এটি ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন